২৬ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ২০:০৮, ২৭ মার্চ ২০২৩

আপডেট: ২০:১৯, ২৭ মার্চ ২০২৩

যৌতুকের দাবিতে নারীকে ‘এসিডে ঝলসে’ হত্যার অভিযোগ

যৌতুকের দাবিতে নারীকে ‘এসিডে ঝলসে’ হত্যার অভিযোগ
বায়ে নিহত ফাতেমা, ডানে অভিযুক্ত স্বামী আরিফ

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় এক নারীকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্যাতনের পর ‘এসিড দিয়ে ঝলসে’ হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ তার পরিবারের লোকজনের। গত রোববার দুপুরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্ল্যাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নিহতের নাম ফাতেমা আক্তার (৩১)। তিনি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পোস্ট অফিস এলাকার মৃত মোসলেহ উদ্দিন সরদার মেয়ে।

নিহতের মা নাসিমা বেগম বলেন, রোববার দুপুরে তার মেয়ের শ্বশুর আলী আহাম্মদ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানান, তার মেয়ে মারা গেছেন। সন্ধ্যা নাগাদ হাসপাতালে পৌঁছে মেয়ের মরদেহ বার্ন ইনস্টিটিউটে পান স্বজনরা।

নাসিমা বলেন, ‘আমাদের এক আত্মীয় সরকারি হাসপাতালে নার্স। তার মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে জানছি, আমার মেয়ে গত ৯ মার্চ থেকে বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি। শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমাদের কিছু জানায় নাই। মারা যাওয়ার পর জানাইছে। আমার মেয়ের দাফনের সময় গোসল যখন দেই তখন গলা থেকে পুরা বুক ঝলসানো পাই। আমরা ধারণা করতেছি, যৌতুকের টাকা না দেওয়ায় আমার মেয়েরে এসিড দিয়া ঝলসাইয়া মারছে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন।’

স্বজনরা জানান, ২০০৮ সালে ফতুল্লার লালপুর এলাকার আলী আহাম্মদের ছেলে আরিফ হোসেনকে নিজে পছন্দ করে বিয়ে করেন ফাতেমা। তাদের ১২ বছরের এক ছেলে এবং ৬ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। ফাতেমার স্বামী একজন নেশাগ্রস্ত। প্রায় সময়ই স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন ফাতেমাকে নির্যাতন করতো বলে অভিযোগ তার স্বজনদের।

‘দুই মাস আগেও ফাতেমার স্বামী আরিফ দুই লাখ টাকা যৌতুক চায়। আমি গরীব মানুষ, এই টাকা কেমনে দিতাম? ওই টাকার জন্য মেয়েটারে খুব মারছেও। পুরা শরীর কালো দাগ পইরা গেছিল। এই যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় মেয়েটারে এসিডে ঝলসাইয়া মারছে। আমি এর বিচার চাই।’, বলেন নিহতের মা।

ফাতেমার খালাতো ভাই মাহবুব হাসান সোমবার রাতে বলেন, ‘রোববারই ফতুল্লা থানায় গিয়ে আমরা অভিযোগ জানাইছিলাম। থানা থেকে ময়নাতদন্তের কাগজ লাগবো বলছিল। লাশ দাফনের পর এখন আমরা আবার থানায় যাচ্ছি মামলা করতে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগটির তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া ফতুল্লা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘ওই নারী দগ্ধ অবস্থায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্ল্যাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। রোববার দুপুরে তিনি মারা গেছেন। পরিবারের অভিযোগ, তাকে হত্যা করা হয়েছে। তবে এসিডে ঝলসানোর বিষয়টি পরিষ্কার নয়। এই বিষয়ে তদন্ত চলছে।’

এই ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিজাউল হক দিপু।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়