সংকটে কিন্ডার গার্টেন স্কুলের মালিক-শিক্ষকরা
প্রেস নারায়ণগঞ্জ: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে বছরখানেক সময়জুড়ে বন্ধ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এতে সংকটে পড়েছে বেসরকারি কিন্ডার গার্টেন স্কুলের মালিক ও শিক্ষকরা। দীর্ঘ সময়জুড়ে প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অধিকাংশ শিক্ষার্থীদেরই বেতন আদায় করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানগুলো। এতে অর্থকষ্টে রয়েছে কিন্ডার গার্টেনগুলোর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। কিছু কিছু কিন্ডার গার্টেনের মালিক তার প্রতিষ্ঠান হস্তান্তর ও বিক্রি করে দিচ্ছেন বলেও খবর রয়েছে। নতুন বছরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি আরও দীর্ঘায়িত হলে বাকিরাও বিপর্যয়ের মুখে পড়বেন বলে মন্তব্য কিন্ডার গার্টেনের সাথে সংশ্লিষ্টদের।
তথ্যমতে, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় পাঁচ শতাধিক কিন্ডার গার্টেন (কেজি) স্কুল রয়েছে। পুরো জেলায় রয়েছে প্রায় ১৩শ’ কিন্ডার গার্টেন। ২০১৯ সালের মার্চে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হলে কিন্ডার গার্টেনগুলোও বন্ধ হয়ে যায়। করোনা পরিস্থিতির কারণে বছরজুড়েও প্রতিষ্ঠানগুলো খুলতে না পারায় শিক্ষার্থীদের বেতন আদায় করা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে কর্মহীন হয়ে পড়েন শিক্ষকরা। তাদের অনেকেই তাদের পেশা বদলেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সদর উপজেলা কিন্ডার গার্টেন এসোসিয়েশনের এক কর্মকর্তা সংবাদকে বলেন, ব্যাপক অর্থ সংকটে রয়েছে কিন্ডার গার্টেনের শিক্ষক, পরিচালক ও স্টাফরা। তারা সকলেই এখন কর্মহীন। জেলা প্রশাসন, সিটি কর্পোরেশনসহ বিভিন্ন সরকারি দফতরে গিয়েও আশানুরূপ সহযোগিতা মেলেনি তাদের। শিক্ষকরা যখন কর্মহীন হয়ে পেশা বদলে পোশাক শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করছেন সেখানে সরকারি দফতরগুলো থেকে সর্বোচ্চ কয়েক প্যাকেট খাদ্যসামগ্রী পাওয়ার কথা জানান তিনি।
কিন্ডার গার্টেন এসোসিয়েশনের আরও কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, নতুন বছরে তাদের নতুন সংকট তৈরি হয়েছে। পুরোনো শিক্ষার্থীরা ভর্তি হচ্ছেন না তাদের প্রতিষ্ঠানে। সংশ্লিষ্টদের মতে, করোনার কারণে অর্থ সংকটে রয়েছে খোদ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও। তাদের অনেকেই শহর ছেড়ে গ্রামে চলে গেছেন। আবার অনেকেই এখনও সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। কেউবা পুরোনো বেতন পরিশোধ না করার কৌশল হিসেবে স্কুল বদলেছেন। এদিকে এমন সংকটের মধ্যে অনেকেই তাদের প্রতিষ্ঠানটি বিক্রি করে দিচ্ছেন অন্যের কাছে। কেউবা বিক্রির চিন্তা করছেন।
তবে ফেব্রুয়ারির মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করতে পারলে এ বিপর্যয় এড়ানো যাবে বলে মনে করেন সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও শিশু কানন প্রি-ক্যাডেট এন্ড হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মজিবুর রহমান। তিনি সংবাদকে বলেন, ‘স্কুল খুলবে কিনা সেই দোলাচলে অনেক শিক্ষার্থীদের ভর্তি করাচ্ছেন তাদের অভিভাবকরা। এদিকে গত বছরের পুরো সময়জুড়ে অর্থকষ্টে থাকা শিক্ষককরা এখনও অনিশ্চয়তায় রয়েছে। সরকার দ্রুত স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত দিলে এই সংকট থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।’
প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম