২৬ এপ্রিল ২০২৪

প্রকাশিত: ২০:০৮, ১২ মার্চ ২০১৯

আপডেট: ১২:০৭, ১৯ মার্চ ২০১৯

সংশ্লিষ্টদের অবহেলায় ভুগছে ইসদাইরবাসী

সংশ্লিষ্টদের অবহেলায় ভুগছে ইসদাইরবাসী

প্রেস নারায়ণগঞ্জ: শহরের প্রাণকেন্দ্র চাষাড়ার অদূরে ইসদাইর এলাকা। শহরের মধ্যে থেকেও একটি যেন অবহেলিত ছিটমহল। চাঁদমারি এলাকার ‘ফরিদা ভবন’ থেকে ইসদাইর রাবেয়া হোসেন হাইস্কুল সড়ক ও ৭২ নং ইসদাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুর্দশা যেন শেষই হয় না। বছরব্যাপী জলাবদ্ধতার কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এ এলাকার বাসিন্দা ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। ইসদাইর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১২টি শ্রেণিকক্ষের ৩টিই পানির নিচে। সংশ্লিষ্টদের অবহেলার কারণেই এই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ওই এলাকার বাসিন্দাদের।

চাঁদমারি এলাকার ‘ফরিদা ভবন’ থেকে ইসদাইর রাবেয়া হোসেন হাইস্কুল সড়কটির অবস্থা নাজুক। শুষ্ক মৌসুমেও পাকা সড়কটি দুর্গন্ধযুক্ত পানির নিচে ডুবে থাকে। তবে সড়কটির বদ্ধপানি, সাধারণ বৃষ্টির পানি নয়। আশেপাশের এলাকায় বসবাসকারী বাসিন্দাদের ব্যবহৃত, ড্রেনের ময়লা ও মানুষের বর্জ্য মিশ্রিত। উক্ত এলাকায় কোনো ড্রেন না থাকায় প্রতিদিন এ সড়কটিতে সেই ময়লা দুর্গন্ধযুক্ত পানি এসে জমা হয়। সিটি কর্পোরেশনের বাসিন্দ হয়েও ড্রেনেজ ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত তারা। প্রতিদিন এই পানির উপর দিয়েই পথ চলতে হয় এ এলাকার বাসিন্দাদের। যার ফলে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকম পানিবাহিত রোগে ভোগতে হচ্ছে তাদের।

সড়কটির পাশে অবস্থিত ‘ফরিদা ভবন’। যা মুক্তিযোদ্ধা ফরিদা বেগমের। বহুতল এই ভবণে রয়েছে সমাজসেবা অধিদপ্তর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় পরিচালিত ডে-কেয়ার সেন্টার, উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিস, ট্রাফিক পুলিশের কার্যালয়সহ বেশ কয়েকটি সরকারি সংস্থার কার্যালয়। এ সকল সংস্থায় প্রতিদিন শত শত মানুষ আসে। আর প্রতিবার বিড়ম্বনায় পরেন তারা।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক প্রেস নারায়ণগঞ্জকে বলেন, ‘সড়কটি কিছুদিন যাবত ঠিক হয়েছে। তবে এখন আরেক সমস্যা উঠে এসেছে, জলাবদ্ধতা। তবে এ পানিতে পয়ঃনিষ্কাশনের ময়লা মিশ্রিত থাকায় আমাদের পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে। যা শেষ হচ্ছে না বললেই চলে।’

জানা যায়, চাঁদমারি এলাকার ‘ফরিদা ভবন’ থেকে ইসদাইর রাবেয়া হোসেন হাইস্কুল সড়কটি ঘেঁষে রয়েছে সেনাবাহিনীর বিশাল এলাকা যা একসময় চাঁদমারি বস্তি ছিল। সেনাবাহিনী ২০০৭ সালে বস্তিটি উচ্ছেদ করে দেয়। এলাকাবাসীর ব্যবহৃত ও বৃষ্টির পানি এক সময় সেখানেই জমা হতো। কিন্তু সেনাবাহিনী কোন এক প্রজেক্টের জন্য সেখানে কাজ করছে এবং সে কারণে পানি নিষ্কাশনের সকল রাস্তা বন্ধ করা হয়েছে। যার কারণেই মূলত জলাবদ্ধতার সৃষ্টি।

এলাকাটি সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন হলেও চাঁদমারি এলাকার ‘ফরিদা ভবন’ থেকে ইসদাইর রাবেয়া হোসেন হাইস্কুল সড়কটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশলের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে রয়েছে। সম্প্রতি সড়কটি সংস্কার করা হলেও ড্রেনেজ ব্যবস্থা না করার কারণে জলাবদ্ধতার ভোগান্তি পোহাচ্ছে স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম সরকারের বলেন, ‘সড়কটি জলাবদ্ধতার কথা আমি জানি। সম্প্রতি সড়কটি পরিদর্শন করে এসেছি। সড়কটির জলাবদ্ধতার মূল কারণ, উক্ত এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা। আমাদের প্রতিষ্ঠান উপজেলা পরিষদের আওতাধীন সড়কের কাজগুলো করে। আমরা ড্রেনেজ ব্যবস্থার কোনো কাজ করি না এবং এর জন্য আমাদের কোন বরাদ্ধ দেয় হয় না। ড্রেনেজ করতে হলে তা উক্ত এলাকার চেয়ারম্যান করতে পারে আমরা না।’

এ বিষয়ে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাসের মুঠোফোনের নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কলটি রিসিভ করেননি।

প্রেস নারায়ণগঞ্জ.কম

সর্বশেষ

জনপ্রিয়